বৃহস্পতিবার, ২৫ জুলাই, ২০১৯

নাকের এলার্জি দূর করার হোমিওপ্যাথিক ঔষধ


নাকের এলার্জি বা এলার্জিক রাইনাইটিস মূলত একটি এলার্জি  জনিত সমস্যা।এতে নাকের ঝিল্লী ও ঝিল্লীর নিচের অংশ বা তার আশেপাশের অংশ ফুলে গিয়ে নাক বন্ধ হয়ে যায়। এটির কারণ অনুযায়ী একে কোল্ড অ্যালার্জি বা ডাস্ট এলার্জি বলা হয়।নাকের এলার্জির প্রধান কারণ হচ্ছে ধুলোবালিঃ ধুলোবালি যদি নাকের ভেতর ঢুকে যায় তাহলে ডাস্ট এলার্জি হতে পারে। দ্বিতীয় কারণ হলো বংশগতঃ পরিবারে বাবা-মা বা ভাই-বোনের কারো যদি এলার্জি থাকে তাহলে অন্যদেরও নাকের এলার্জি হতে পারে। তৃতীয় কারণ হলো আবহাওয়ার পরিবর্তনঃ আবহাওয়ার পরিবর্তন জনিত কারণে ঠান্ডা লেগে নাকের এলার্জি হতে পারে। এছাড়াও যদি বায়ু দূষিত হয়ে যায়, সেই দূষিত বায়ুতে শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়ার কারণে নাকের এলার্জি হয়। ধোঁয়া যদি নাকের ভেতর ঢুকে যায়, সেক্ষেত্রেও নাকের এলার্জি হয়। খাবারের গন্ডগোলের কারণেও নাকের এলার্জি হতে পারে অর্থাৎ যে সমস্ত খাবার খেলে এলার্জি হয় যেমন বেগুন,ডিম, কচু শাক, ইলিশ মাছ ইত্যাদি খাওয়ার কারণেও অনেকের এলার্জি হয়। নাকে যদি কোন ধরনের ইনফেকশন হয় সেক্ষেত্রেও নাকের এলার্জি হতে পারে। 

নাকের এলার্জি
লক্ষণঃ নাকের এলার্জি যেকোন ঋতুতে যেকোন বয়সের নারী-পুষের মধ্যেই দেখা যায়। নাকের এলার্জি হলে নাক দিয়ে কাঁচা পানি বের হয়, বার বার হাঁচি হয়, নাক চুলকায়, কাশি হয়, মাথা ব্যাথা হয়, চোখ দিয়ে পানি বের হয়, চোখ চুলকায়।

ঔষধঃ নাকের এলার্জির ক্ষেত্রে একটি কার্যকরী জার্মান হোমিওপ্যাথিক কম্বিনেশন ঔষধ হলো এডেল-20 এই ঔষধটিতে যে সমস্ত হোমিওপ্যাথিক ঔষধ মেশানো রয়েছে তা হলো।
১। আয়লানথাস গ্ল্যান্ডুলাস ৪ এক্সঃ যা ইনফেকশন প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে, ইনফেকশনের কারণে যদি নাকের এলার্জি হয়ে থাকে তা প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। 
২। কোমোক্লেডিয়া ৬ এক্সঃ যা চোখের জ্বলন, চোখের চুলকানি, চামড়ার চুলকানি প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।
৩। ইউফ্রেশিয়া ৬ এক্সঃ যা চোখের জ্বলন, চোখের পানি ঝড়া, নাকের জ্বলন, নাকের পানি ঝরা, নাকের এলার্জি দূর করতে সাহায্য করে। 
৪। গ্র্যাটিওলা ৪ এক্সঃ যেটি পেটের গন্ডগোল এর কারনে যদি এলার্জি হয় তা দূর করতে সাহায্য করে। 
৫। যুগলান ৪ এক্সঃ যা চামড়ার এলার্জি দূর করতে সাহায্য করে, হজম শক্তি বৃদ্ধি করে। 
৬। উকুবাকা ৪ এক্সঃ যা ফ্লু বা ইনফেকশন দূর করতে সাহায্য করে এর ফলে যদি এলার্জি হয় তা দূর করে। 
৭। সারসা প্যারিলা ৮ এক্সঃ যা আমাদের শরীরের বিষাক্ত পদার্থ বের করে দিতে সাহায্য করে, রাইনাইটিস নিয়ন্ত্রন করতে সাহায্য করে, চোখের এলার্জি, নাকের এলার্জি এবং এর সাথে যদি সাইনোসাইটিস হয়ে থাকে তার ক্ষেত্রেও সালসা প্যারিলা ৮ এক্স ঔষধ টি কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। 
৮। টেরাস্কাকাম ১২ এক্সঃ যা আমাদের লিভার, গলব্লাডার, কিডনির কাজকে সক্রিয় করে দিয়ে আমাদের শরীরের বিষাক্ত পদার্থ বের করে এলার্জি নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।

এসমস্ত হোমিওপ্যাথিক ঔষধ দিয়ে এডেল-20 হোমিওপ্যাথিক কম্বিনেশন ওষুধ টি তৈরি হয়।এটি বড়রা এক কাপের চার ভাগের এক ভাগ পানিতে ২০ ফোঁটা মিশিয়ে দিনে তিনবার খাবার ৩০ মিনিট পূর্বে খাবেন আর ছোটরা ১০ ফোঁটা করে দিনে তিনবার খাবে।

নাকের এলার্জির কার্যকরী বায়োকেমিক কম্বিনেশন হলো বি সি-৫। এতে যে সমস্ত বায়োকেমিক ঔষধ মেশানো রয়েছে তা হলো ফেরাম ফস যা আবহাওয়ার পরিবর্তন জনিত কারণে যদি ঠান্ডা লেগে এলার্জি হয় তা দূর করতে সাহায্য করে। মেশান রয়েছে কালি মিউর, নেট্রাম মিউর, কালি সালফ ইত্যাদি বায়োকেমিক ঔষধ যা এলার্জির ক্ষেত্রে কার্যকরী ভূমিকা রাখে। এটি বড়রা ৪ টি করে ট্যাবলেট দিনে তিনবার চিবিয়ে খাবেন আর ছোটরা ২ টি করে ট্যাবলেট দিনে তিনবার খাবে।

নাকের এলার্জির ক্ষেত্রে যদি নাক বা চোখ দিয়ে পানি বের হয়, বার বার হাঁচি হয় সেক্ষেত্রে এলিয়াম সিপা-৩০ বড়রা ৩ ফোঁটা করে জিভে দিয়ে দিনে তিনবার খাবেন। শরীরে যদি চর্ম রোগ থাকে, কোষ্ঠকাঠিন্য থাকে সে ক্ষেত্রে সালফার-৩০ প্রতিদিন সকালে ৩ ফোঁটা করে জিভে দিয়ে দিনে একবার খাবেন। যদি চর্মরোগ থাকে, স্বাস্থ্য থলথলে হয়, চেহারা পরিষ্কার হয় তাহলে ক্যালকেরিয়া কার্ব-৩০ তিন ফোঁটা করে দিনে দুইবার খাবেন। ছোটরা খেলে এক ফোঁটা করে এক চামচ পানিতে দিয়ে দিনে দুইবার খাবে। নাকের এলার্জির ক্ষেত্রে যদি কফ থাকে, কাশি হয় সে ক্ষেত্রে ক্যালি বাইক্রম-৩০ তিন ফোঁটা করে জিভে দিয়ে দিনে তিনবার খাবেন আর ছোটরা এক ফোঁটা করে এক চামচ পানিতে দিয়ে দিনে তিনবার খাবে।

নাকের কোল্ড এলার্জি বা ডাস্ট এলার্জির ক্ষেত্রে এই ওষুধগুলো সেবন করলে আশা করা যায় খুব শীঘ্রই এলার্জি থেকে মুক্ত হওয়া যাবে।