মঙ্গলবার, ২৫ অক্টোবর, ২০২২

পাইলস বা অর্শ রোগের হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা

 

পাইলস একটি অতি পরিচিত স্বাস্থ্য সমস্যা। এটি অর্শ রোগ নামেও পরিচিত। অনেকেই এই সমস্যায় দীর্ঘদিন ভুগলেও ব্যাপারে পরামর্শ চাইতে বা ডাক্তার দেখাতে সংকোচ বোধ করেন। ক্ষেত্রবিশেষে পাইলস এর সঠিক চিকিৎসার বদলে  কবিরাজি ঔষধ, ঝাড়-ফোঁক, পানি পড়া, তাবিজ-কবজ অন্যান্য টোটকা গ্রহণ করেন। এসব কারণে পাইলস ক্রমশ জটিল আকার ধারণ করে। তাই পাইলস বা অর্শ রোগ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে সম্বন্ধে সচেতন হওয়া জরুরী।

পাইলস বা অর্শ রোগ কী?

পায়ুপথ বা পায়খানার রাস্তার মুখ যদি কোনো কারণে ফুলে যায় এবং সেখান থেকে রক্ত পড়ে কিংবা পায়খানার রাস্তায় যদি গোটার মত হয় তখন একে বলা হয় পাইলস। চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় এর নাম হেমোরয়েড। জটিল আকার ধারণ করার আগে অপারেশন ছাড়াই হোমিওপ্যাথিক ঔষধের মাধ্যমে অর্শ রোগের চিকিৎসা সম্ভব।

Online Homeopathy

পাইলস এর লক্ষণগুলো কী?

পাইলস বা অর্শ রোগের অন্যতম চারটি লক্ষণ নিচে তুলে ধরা হলো। এসব লক্ষণ দেখা দিলে চিকিৎসা শুরু করা জরুরী।

. পায়খানার সাথে রক্ত যাওয়া

পাইলস হলে পায়খানার সাথে উজ্জ্বল লাল বর্ণের অর্থাৎ তাজা রক্ত যেতে পারে। সাধারণত পায়খানার পরে টয়লেট পেপার ব্যবহার করলে সেখানে রক্তের ফোঁটা লেগে থাকতে পারে। অথবা কমোডে বা প্যানের গায়ে টকটকে লাল রক্তের ছোপ দেখা যেতে পারে। পাইলস হলে পায়ুপথের মুখে থাকা অ্যানাল কুশনগুলো থেকে রক্তক্ষরণ হয়। এই রক্ত বেরিয়ে গিয়ে জমাট বাধার সুযোগ পায় না। কারণে এক্ষেত্রে তাজা লাল রঙের রক্ত দেখা যায়। কিন্তু যদি কোনো কারণে পায়খানার সাথে গাঢ় খয়েরী রঙের রক্ত যায়, বা আলকাতরার মতো কালো নরম পায়খানা হয়, তবে তা সাধারণত পাইলস এর কারণে নয়। পরিপাকতন্ত্রের কোনো অংশে রক্তপাতের কারণে পায়খানার সাথে এমন গাঢ় রক্ত যেতে পারে, তাই এমনটা হলে রক্তপাতের কারণ জানার জন্য দ্রুত ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে।

. পায়ুপথের মুখের অংশগুলো বেরিয়ে আসা

পাইল হলে সাধারণত মলত্যাগের পরে অ্যানাল কুশনগুলো নরম গোটার মতো বের হয়ে আসে। এগুলো কিছু সময় পর নিজে নিজেই ভেতরে ঢুকে যায়। অনেকের ক্ষেত্রে এগুলো আঙ্গুল দিয়ে ভেতরে ঢোকানোর প্রয়োজন হতে পারে। আবার কারও কারও ক্ষেত্রে পাইলস এমন পর্যায়ে পৌঁছে যায় যে আঙ্গুল দিয়েও গোটাগুলো ভেতরে ঢোকানো যায় না।

. পায়খানার রাস্তায় ব্যথা হওয়া

পাইলস রোগে সাধারণত তীব্র ব্যথা হয় না। তবে যদি পায়ুপথের গোটা এমন পর্যায়ে চলে যায় যে সেগুলো আঙুল দিয়ে ঠেলেও ভেতরে ঢোকানো না যায়, এবং সেগুলোতে রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে যায়, সেক্ষেত্রে অনেক সময় তীক্ষ্ণ বা তীব্র ব্যথা হতে পারে। এই ব্যথা সাধারণত - দিন স্থায়ী হয়। ব্যথা বেশি হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। এছাড়া বিশেষ প্রয়োজনে ঘরোয়া উপায়ে ব্যথার চিকিৎসা করা যায়।

. পায়খানার রাস্তায় চুলকানি

পাইলস হলে কখনো কখনো পায়ুপথে বা এর মুখের আশেপাশে চুলকানি হতে পারে। এছাড়া পায়ুপথ দিয়ে মিউকাস বা শ্লেষ্মা-জাতীয় পিচ্ছিল আঠালো পদার্থ বের হতে পারে। অনেক সময় মলত্যাগ করে ফেলার পরও বারবার মনে হতে পারে যে পেট পরিষ্কার হয় নি, আবার মলত্যাগ করা প্রয়োজন।

পাইলস এনাল ফিসার-এর পার্থক্য 

পাইলস এনাল ফিসার বা গেজ রোগের লক্ষণগুলোর মধ্যে কিছুটা মিল থাকলেও এই দুইটি পৃথক দুইটি রোগ। দুটি রোগেই পায়ুপথে চুলকানি হতে পারে এবং টাটকা লাল রক্ত যেতে পারে। তবে এনাল ফিসারে রক্ত খুব অল্প পরিমাণে যায়। পাইলস এবং এনাল ফিসার এই দুইটির মধ্যে মূল পার্থক্য হচ্ছে-

পাইলস হলে পায়ুপথে নরম গোটার মত দেখা দেয়। গোটাগুলো সাধারণত মলত্যাগের পরে বের হয়ে আসে, আবার কিছু সময় পর নিজে নিজেই ভেতরে ঢুকে যায় অথবা আঙ্গুল দিয়ে ভেতরে ঢোকাতে হয়। এছাড়া পাইলস হলে পায়ুপথে শ্লেষ্মার মতো দেখতে পিচ্ছিল কিছু পদার্থ বের হতে পারে।

এনাল ফিসার বা গেজ রোগের ক্ষেত্রে সাধারণত এসব লক্ষণ দেখা যায় না। আর এক্ষেত্রে প্রতিবার মলত্যাগের সময়ই তীব্র ব্যথা হয়। পাইলসে সাধারণত ব্যথা হয় না। 

পাইলস কেন হয়?

পাইলস কেন হয় এর সঠিক কারণ জানা না গেলেও কিছু কিছু বিষয় পাইলসের ঝুঁকি বাড়ায়, যেমন-

  • শক্ত বা কষা পায়খানা
  • মলত্যাগের সময় জোরে চাপ দেয়া
  • অনেক সময় ধরে মলত্যাগের কসরত করা
  • পায়খানার বেগ আটকে রাখা
  • শারীরিক পরিশ্রম না করা 
  • অতিরিক্ত ওজন 
  • শাকসব্জী অন্যান্য আঁশযুক্ত খাবার এবং পানি কম খাওয়া।
  • পরিবারে কারো পাইলস থাকা।

এছাড়া গর্ভাবস্থায় নানান শারীরিক পরিবর্তনের কারণেও কারও কারও ক্ষেত্রে পাইলস এর ঝুঁকি বেড়ে যায়।

স্বাভাবিক অবস্থায় পায়খানার রাস্তা বা পায়ুপথের মুখ সাধারণত বন্ধ থাকে। যখন প্রয়োজন হয়, তখন চাপ দিয়ে পায়ুপথের মুখ খুলে শরীর থেকে পায়খানা বা মল বের করে দেওয়া হয়।

পায়ুপথের মুখ বন্ধ রাখতে সেখানে বেশ কিছু জিনিস একসাথে কাজ করে। তার মধ্যে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ হল অ্যানাল কুশন। এই কুশনগুলো দিক থেকে চাপ দিয়ে পায়ুপথের মুখ বন্ধ রাখতে সাহায্য করে।

যদি কোনো কারণে তিন দিকের এই কুশনগুলো ফুলে যায়, সেগুলো থেকে রক্তক্ষরণ হয়, সেগুলো নিচের দিকে নেমে যায়, অথবা পায়ুপথের চারপাশে গোটার মত দেখা যায়, তখন তাকে পাইলস বা অর্শ রোগ বলা হয়ে থাকে।

পাইলস এর ব্যথা সারানোর উপায়

ঘরোয়া পদ্ধতিতে অর্শ বা পাইলস রোগের ব্যথা কমানোর ৪টি উপায় নিচে তুলে ধরা হলো-

. ব্যথার জায়গাটি কুসুম গরম পানিতে ভিজিয়ে রাখা যায়। ছোট বাচ্চাদের গোসল করানো হয় এমন আকারের একটি বোলে কুসুম গরম পানি নিয়ে সেখানে বসতে পারেন। দিনে বার পর্যন্ত এটি করা যায়। অন্য সময়ে কোথাও বসতে গেলে একটি বালিশ ব্যবহার করে সেটার ওপর বসা যেতে পারে।

. একটা প্যাকেটে কিছু বরফ নিয়ে সেটা তোয়ালে দিয়ে পেঁচিয়ে পায়ুপথে গোটাগুলোর ওপরে লাগানো যায়। এতে আরাম পাওয়া যাবে।

. বিছানায় শুয়ে পা উঁচু করে রাখলে পাইলস এর গোটাগুলোতে রক্ত চলাচল সহজ হবে ব্যথা উপশম হবে। শোবার সময় পায়ের নিচে বালিশ দেওয়া যেতে পারে। এছাড়া খাটের পায়ার নিচে কোন কিছু দিয়ে খাটের এক পাশ উঁচু করে সেদিকে পা দেওয়া যেতে পারে।

. পায়ুপথ সবসময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন শুকনো রাখতে হবে। মলত্যাগের পর জোরে ঘষাঘষি না করে আলতোভাবে জায়গাটি পরিষ্কার করে নিতে হবে। টয়লেট পেপার হালকা ভিজিয়ে তারপর সেটা দিয়ে মুছা যেতে পারে।

পাইলস এর ঘরোয়া চিকিৎসা

পাইলস এর চিকিৎসা জন্য পাইলস হওয়ার কারণগুলো প্রতিরোধ করতে হবে। অর্শ রোগ সারানোর ৬টি কার্যকর ঘরোয়া উপায় নিচে তুলে ধরা হলো-

. কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে বাঁচতে বেশি বেশি আঁশ বা ফাইবারযুক্ত খাবার খতে হবে এর মধ্যে রয়েছে শাকসবজি, ফলমূল, ডাল, লাল চাল লাল আটার তৈরি খাবার। সেই সাথে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে। ফাইবার পানি শোষণ করার মাধ্যমে পায়খানা নরম করে, তাই ফাইবারকে কাজ করতে হলে সারাদিনে অন্তত দুই লিটার পানি পান করতে হবে।

এই দুটো কাজ করলে সাধারণত কয়েকদিনের মধ্যে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়, আর কয়েক সপ্তাহের মধ্যে পাইলস এর সব ধরনের লক্ষণ উপশম হয়। সপ্তাহ অর্থাৎ দেড় মাস ধরে যদি খাবারে যথেষ্ট পরিমাণ ফাইবার নিশ্চিত করা যায়, তাহলে ৯৫ শতাংশ পাইলস রোগীর পায়খানার সাথে রক্ত যাওয়া কমে আসে। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে ইসবগুলের ভুসি একটি কার্যকর ঔষধ।

মলত্যাগের সময় খুব জোরে চাপ দেয়া থেকে বিরত থাকতে হবে পায়খানা যাতে নরম হয় এবং সহজেই মলত্যাগ করা যায়, সেই উপদেশগুলো মেনে চলতে হবে।

. মলত্যাগে প্রয়োজনের অতিরিক্ত সময় ব্যয় করা যাবে না টয়লেটে বসে ম্যাগাজিন, পেপার, মোবাইল-এসবে মনোনিবেশ করা বাদ দিতে হবে।

. পায়খানার চাপ আসলে তা আটকে রাখা উচিত না, এতে পায়খানা আরও শক্ত হয়ে কোষ্ঠকাঠিন্য  দেখা দেয়। চাপ আসলে দেরি না করে বাথরুমে চলে যেতে হবে।

. নিয়মিত ব্যায়াম বা শরীরচর্চা করতে হবে ব্যায়ামের মধ্যে ভারী ব্যায়াম বা প্রতিদিন দৌড়ানো বেছে নিতে হবে, তা নয়। শরীরকে চলমান রাখতে হাঁটাচলা, হালকা স্ট্রেচিং, যোগব্যায়াম ইত্যাদির মধ্যে যেকোনোটাই বেছে নেওয়া যায়। গবেষণায় দেখা গেছে, কোষ্ঠকাঠিন্য কমাতে হাঁটাহাঁটি বা হালকা শরীরচর্চাও কার্যকরী ভূমিকা রাখে।

প্রয়োজনে অল্প অল্প করে শুরু করা যেতে পারে। দিনে ২০ মিনিট হাঁটুন। এক বেলা দিয়ে শুরু করুন, এরপর সকাল-সন্ধ্যা দুই বেলা করে হাঁটুন। প্রথমে সপ্তাহে তিন দিন এভাবে হেঁটে আস্তে আস্তে সেটা পাঁচ দিনে নিয়ে আসুন। 

. ওজন অতিরিক্ত হলে তা কমিয়ে ফেলতে হবে ওজন বেশী হলে পাইলস হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে, তাই পাইলস এর রোগীদের ওজন কমানোর পরামর্শ দেয়া হয়।

পাইলসের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হোমিওপ্যাথিক ঔষধ

পাইলস নিরাময়ে লক্ষণভিত্তিক বহু হোমিওপ্যাথিক ঔষধ ব্যবহার হয়ে থাকে, তার মধ্যে প্রধান প্রধান ঔষধ নিম্নরূপ-

কোলিনসোনিয়া

রোগীর কোষ্ঠ বদ্ধ শুকনা মল অতিকষ্টে নির্গত হয়। মলদ্বার বেদনা করে, মনে হয় মলগুলি কাঁচের টুকরার আঘাতের মত বেদনা নিয়ে নির্গত হয়। খোঁচালাগে বেদনা হয় জ্বলে, রক্ত ঝড়ে তবে কোলিনসোনিয়া তার উপযুক্ত ঔষধ।

ইস্কিউলাস হিপ

কোমরে বেদনা এই ঔষধের নিত্যসহচর। অর্শ রোগীর কোমর বেদনা রক্তস্রাব তেমন একটা হয় না। যদিও হয় অনেকদিন পরে হয়। মলদ্বারে খোঁচানি, টাটানি বেদনা। মলদ্বার চুলকায় জ্বলে ইত্যাদি লক্ষনে ইস্কিউলাস হিপ উপযুক্ত ঔষধ।

হেমামেলিস

রক্তপাতযুক্ত বা হ্যামোরয়েডের জন্য  সর্বোত্তম হোমিওপ্যাথিক ঔষধের মধ্যে এটি একটি। রোগীদের চিকিৎসা করার সবচেয়ে প্রচলিত কারণ হল তাদের রক্ত ​​স্রাব জরুরী বন্ধ করা। এই ধরনের রোগীদের সাধারণত বেশ চিন্তিত এবং উদ্বিগ্ন মনে হয়। তাদের উদ্বেগ হ্রাস করার সবচেয়ে ভাল উপায় যত তাড়াতাড়ি সম্ভব রক্তপাত বন্ধ করতে হয়। এই ক্ষেত্রে, হ্যামামেলিস রক্তপাতযুক্ত পাইলসের জন্য  সর্বোত্তম হোমিওপ্যাথিক ঔষধ। রক্তক্ষরণ বন্ধ করার জন্য এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ঔষধ।

আর্সেনিক এলবম

অস্থিরতা, অবসন্নতা, খিটখিটে মেজাজ, শীতকাতর অর্শ রোগীর জন্য উপযোগী। মলদ্বার জ্বালা, বেদনায় রোগী ছটফট করলে সেই বেদনা গরমে আরাম বোধ হলে আর্সেনিক এলবম অব্যর্থ।

এসিড সালফ

যে রোগী কাজে কর্মে ব্যাস্ত, সকল কাজে তাড়াহুড়ো করে এই ধাতুর রোগীর জন্য উপযোগী। যদি অর্শ বড় হয়ে মলদ্বার বন্ধ হয়ে যায়। গন্ধহীন রসে মলদ্বার ভিজে যায়, মলদ্বার জ্বলে তাহলে এসিড সালফ উপযুক্ত ঔষধ।

মেডোরিনাম

রোগীর মলদ্বার হতে যদি মাংস ধোয়া জলের মতো  দুর্গন্ধযুক্ত রস ঝড়ে তবে মেডোরিনাম উপযুক্ত ঔষধ।

এসিড নাইট্রিক

রোগীর মলদ্বারে জ্বালা মনে করে, মল দ্বারে পিনের মত বিদ্ধ হচ্ছে এরুপ অনুভুতি। খিটখিটে মেজাজ, শীতকাতর, প্রস্রবে তীব্র গন্ধ থাকে সেই রোগীর জন্য এসিড নাইট্রিক উপযোগী।

এসিড মিউর

যে রোগী সামান্য কারণে রেগে যায়, শীতকাতর, অর্শে টাটানি, বেদনা, কাপড়ের ঘর্ষণও সহ্য হয়না, গরম পানিতে আরাম বোধ করে এমন রোগীর জন্য এসিড মিউর উপযোগী।

এলো

যে রোগীর অলস স্বভাব, পায়খানার সাথে বলি বাহির হয়। বলি আঙ্গুরের থলির মত দেখায়, জ্বালা করে, সেই জ্বালা ঠান্ডা পানিতে আরাম হয়, মলদ্বার চুলকায় সেই রোগীর জন্য এলো উপযুক্ত ঔষধ।

নাক্স ভম

নাক্স ভম কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময়ে সহায়তা করে। মল ত্যাগের তীব্র বাসনা কিন্তু কোষ্ঠকাঠিন্যের কারণে মল বের হয় না বা সামান্য বের হয়। গলায় খাদ্যদ্রব্য আটকে আছে এমন অনুভূতিসহ বুক জ্বলন।

তৈলাক্ত খাবার বা জাঙ্কফুড খাওয়ার অভ্যাস রয়েছে, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভাস বা ত্রুটিযুক্ত জীবনযাপনের কারণে কোষ্ঠকাঠিন্য জনিত পাইলস বা অর্শ নিরাময়ের জন্য এটি অন্যতম কার্যকর হোমিওপ্যাথিক রেমেডি।

সালফার

মল কঠিন। মল ত্যাগের পরে মলদ্বারের জ্বলন অনুভূত হয়। হাত, পা ও মাথার তালুতেও গরম ও জ্বলন অনুভূত হয়। সবসময় মলদ্বারে চুলকানি থাকে। খুব ভোরে বিছানা থেকে উঠার ঠিক পরেই মল ত্যাগের ঝোঁক থাকে। এসব লক্ষণযুক্ত পাইলস বা অর্শ রোগীর জন্য সালফার একটি উৎকৃষ্ট ঔষধ।

ক্যালেন্ডুলা

পায়খানার রাস্তা যদি মাত্রাতিরিক্ত ফুলে যায়, ইনফেকশন হয়ে যায়, ঘায়ের মতো হয়ে যায়, ব্যথায় টনটন করতে থাকে, তবে ক্যালেন্ডুলা ঔষধটি নিম্নশক্তিতে কিছু পানির সাথে মিশিয়ে তাতে তুলা ভিজিয়ে সেখানে দু-চার ঘন্টা পরপর প্রয়োগ করলে যত মারাত্মক ইনফেকশান বা ফোলা-ব্যথাই হোক না কেন, দুই-এক দিনের মধ্যে চমৎকার ফল পাওয়া যায়।

রোগের প্রাথমিক পর্যায়ে নিয়মিত বেশি করে শাক-সবজি খেলে সাধারণত রোগটি সেরে যায়। এছাড়া বেশি করে পানি পান ফলমূল খেলেও প্রাথমিক পাইলস  ভালো হয়ে যায়। পাইলস রোগীদেরকে উপযুক্ত খাবার গ্রহণে সচেতন থাকতে হবে।

অর্শ বা পাইলস রোগীদের গ্রহণীয় খাবার

শাকসবজি, ফলমূল, সব ধরণের ডাল, সালাদ, দধি, গাজর, মিষ্টি কুমড়া, লেবু জাতীয় টক ফল, পাকা পেপে, বেল, আপেল, কমলা, খেজুর, ডিম, মাছ, মুরগীর মাংস, ঢেঁকি ছাঁটা চালের ভাত আটা ইত্যাদি।

অর্শ বা পাইলস রোগীদের বর্জনীয় খাবার

খোসাহীন শস্য, গরু, খাসি অন্যান্য চর্বিযুক্ত মাংস, মসৃণ চাল, কলে ছাঁটা আটা, ময়দা, চা, কফি, চীজ, মাখন, চকোলেট, আইসক্রীম, কোমল পানীয়, সব ধরণের ভাজা খাবার যেমনঃ পরোটা, লুচি, চিপস ইত্যাদি।